রক্তের লিভার ফাংশন টেষ্ট অস্বাভাবিক :অবহেলা নয়
রক্তের লিভার ফাংশন টেষ্ট অস্বাভাবিক :অবহেলা নয়
লিভার শরীরের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিনিয়ত লিভার অনেক কাজ করে যাচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ভাবে লিভার আক্রান্ত হলে এবং অল্প ক্ষতিগ্রস্থ হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষ সুস্থ হয়ে যায়। তবে ব্যাপক ক্ষতি গ্রস্থদের কিছু অংশের মৃতু ঘটতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদি ভাবে লিভার ক্ষতি গ্রস্ত হলে এই ক্ষতি থেকে লিভারকে সুস্থ করা কঠিন এবং ব্যায়বহুল।
- .রক্তের লিভারের পরীক্ষা অস্বাভাবিক হলে মনে করতে হবে আপনি সামান্যতম থেকে বেশ ক্ষতিকারক লিভার ও পিত্তনালীর অসুখে আক্রান্ত। প্রাথমিক ভাবে লিভারের অসুস্থতা ধরতে লিভারের প্রচলিত রুটিন লিভার ফাংশান টেষ্ট (LFT) করা হয়। এগুলো হচ্ছে রক্তের ALT (SGPT), AST (SGOT,) ALKALINE PHOSPATASE এবং বিলিরুবিন। এগুলোর যে কোন একটা পরীক্ষা অস্বাভাবিক হলে চিন্তার বিষয়। এই প্রবন্ধে লিভারের ফাংশন টেষ্টের (LFT) অস্বাভাবিকতার গুরুত্ব তুলে ধরাই আমার উদ্দেশ্যে। LFT পরীক্ষার অস্বাভাবিকতার কারন নানাবিধ ও হাজারে তাই কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারন উল্লেখ করলাম।
মানুষ abnormal লিভার টেষ্টের সবচেয়ে বেশি যে টেষ্টটা নিয়ে লিভার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন সেটা ALT বা SGPT ও AST বা SGOT, পরবর্তী টেষ্টটা বিলিরুবিন। লিভারের এসব পরীক্ষার একক ভাবে বা সমষ্টিগত ভাবে বাড়তে পারে। লিভারে ALT/SGPT ও AST/SGOT লিভারের প্রদাহ বা ক্ষতের (Hepatitis/Necrosis) কারনে হয়, এটা Liver inflammation এর খুবই সংবেদনশীল টেষ্ট।
অধিকাংশ লিভারের অসুখে ALT/SGPT এই পরীক্ষাটি বাড়ে,যেমন স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি ভাইরাস হেপাটাইটিস, ঔষধের পর্শ্বপ্রতিক্রিয়া,ফ্যাটি লিভার এবং মদ্যপান সহ বহু লিভার অসুখ। এখানে জেনে রাখা দরকার গর্ভবতি মহিলাদের লিভারে টেষ্ট অস্বাভাবিক হলে খুব চিন্তার কারন হতে পারে। জরুরি ভাবে লিভার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে ,কারন মৃত্যুর ঝুঁকিপূর্ন কতগুলি গর্ভকালিন লিভারের অসুখ ধরা যায় এবং অতি দ্রুত সুচিকিৎসার ব্যাবস্থা করা যায়।
রক্তে বিলিরুবিন বাড়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারন হোল ভাইরাল হেপাটাইটিস, রক্ত ভেংগে যাওয়া,পিত্তথলি এবং পিত্তনালীর পিত্তবাস নিঃসরনে বাধাগ্রস্ত হওয়া, অসুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং বংশগত কয়েকটি লিভারের অসুখের কারনে বিলিরুবিন বাড়তে পারে। এছাড়া লিভার সিরোসিস শেষের দিকে বিলিরুবিন বাড়ে সেটা একটা খারাপ লক্ষন এবং লিভার জনিত মৃত্যুর পূর্বাভাস হতে পারে।
রক্তের ALKALINE PHOSPHATASE বর্ধিতও বিভিন্ন কারনে হতে পারে। এগুলো পিত্তনালীর মধ্যে পিত্তরস বাধাগ্রস্থ হওয়ার বিভিন্ন কারন ও পিত্তনালীর ক্যানসারে হতে পারে। কয়েকটি ঔষধ সেবনে মারাত্নক ভাবে পিত্তনালীর পিত্তরস নিঃসরনে বাধগ্রস্ত করে এমনকি লিভারের ভিতরে পিত্তনালী সম্পুর্ন ভাবে ধংস করে ফেলে। এই অবস্থায় লিভার TRANPLANT ছাড়া রোগীকে বাচানো সম্ভব না।
শুধু মাত্র সাধারণ এবং প্রচলিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যেমে লিভারের পরীক্ষার অস্বাভাবিকতা ধরা যায়।
রোগ লক্ষন ছাড়াই এই পরীক্ষাগুলি অস্বাভাবিকতা আসতে পারে এজন্য প্রতি ৬ মাস থেকে ১বৎসর পর পর উপরোক্ত লিভারে পরীক্ষা গুলি করা প্রয়োজন। পরীক্ষায় কোন একটির টেষ্ট অস্বাভাবিক হলে লিভার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। অবহেলা কোন মতেই কাম্য নয়।
Prof. Dr. Mahbub H Khan MBBS, PhD-Liver Med (Sydney) DSM (Vienna) Website: www.profmahbubhkhan.com Mobile 01911356298