গ্যাষ্ট্রিক রোগের ডন:হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি
গ্যাষ্ট্রিক রোগের ডন:হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি
জীবদ্দশায় পেটে ব্যাথা, বুক পেটে জালা করেনি এমন কোন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন । ঔষধ শিল্পের বড় একটা আয় গ্যাষ্ট্রিক বা পেপটিক আলসারে ঔষধ বিক্রির মাধ্যমে হয়। আমাদের দেশের মানুষ শরীরে র অনেক সমস্যাকে গ্যাষ্ট্রিক বলে মনে করে এবং হর হামেশায় পেপটিক আলসারে ঔষধ সেবন করে।
১৯৮১ সালের আগ পর্য্যন্ত চিকিৎসকরা ব্যাথা নিরাময়কারি ঔষধ সেবন, ধুমপান ও মদ্যপান এবং মানসিক চাপকে পেপটিক আলসারের কারন হিসেবে জানত। কিন্তু ১৯৮১ সালে অষ্ট্রেলিয় চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণার বদৌলতে এত দিনের ধারনা বদলে যায়। আবিষ্কৃত হলো ছোট একটা ব্যাকটেরিয়া, যার নাম দেওয়া হলো হেলিকোব্যাকটর পাইলরি। এই হেলিকোব্যাকটার পাইলরি পেপটিক আলসার জনিত রোগ সমুহের প্রধান কারন। পূর্বের বর্ননার কারন গুলোর ভুমিকা কম।
সমগ্র পৃথিবীতর জনসংর ৫০% হেলিকোব্যাকটার পাইলরি দিয়ে আক্রান্ত । বাংলাদেশে এই হার ৮০ – ৯০% । এই জীবানু ৭০–৮০ ভাগ গ্যাষ্ট্রিক আলসারের এবং ৯০–১০০ ভাগ ডুওডেনাল আলসাররের জন্য দায়ী। হেলিকোব্যাকটার. দ্বারা আক্রান্ত নয় তাদের তুলনায় আক্রান্তদের পেপটিক আলসার জনিত রোগে ভোগার সম্ভাবণা ৩–৪ গুন বেশি।
বাংলাদেশে পেপটিক আলসারের প্রাদূরভাব আশির দশকে ছিল প্রায় ১৫% যার মধ্যে দুই তৃতায়াংশ বেশি ডুওডেনাল আলসার। হেলিকোব্যাকটার আক্রান্ত শতকরা ১০–২০ ভাগ মানুষ তাদের জীবদ্দশায় পেপটিক আলসারে ভোগেন। ইদাংনিং গবেষণার দেখা যাচ্ছে এই হার কমে এসেছে। সারা পৃথিবীতে পেপটিক আলসারে আক্রান্তের হার ও মৃত্যুর হার দুইই কমে এসেছে। এর প্রধান কারন আবিষস্কৃত জীবানু হেলিকোব্যাকটর পাইলেরির কার্যকর চিকিৎসা ও প্রতিরোধ । এছাড়াও উন্নত মানের পেপটিক আলসারের ঔষধ প্রতি নিয়ত ব্যাবহার। ২০১৫ গবেষণার ফল অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে প্রায় ৮৮মিলিয়ন মানুষ পাকস্থলীর আলসারে আক্রান্ত হয়েছিল । একই সালে দেখা যায় সারা পৃথিবীতে ২৬৮০০০ মানুষের পেপটিক আলসারে মৃত্যু ঘটেছে সেটা ১৯৯০ সালের চেয়ে ৬০০০০ কম।
মানুষ হেলিকোব্যাকটার পাইলেরির প্রধান বাহক। হেলিকোব্যাকটার পাইলেরি মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির মাধ্যমে সরাসরি থুথু, মল সংক্রামিত সবজি ও পানির মাধ্যেম রোগ ছড়ায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ঘনবসতিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
H Pylori in Gastric mucosal biopsy
মুখের ভিতর দিয়ে পারিপাকতন্ত্রের প্রবেশের পর পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্ত্রএর প্রথম অংশে (ডুওডেনাম) হেলিকোব্যাকটার অবস্থান নেয়। অন্যান্য অনেক জীবানু পাকস্থলীর এসিড পরিবেশে বেচে থাকতে না পারলেও হেলিকোব্যাকটার জীবানুর শরীরের এসিড নিউটিলাইজারে নিঃসরনে মাধ্যেমে ভাল ভাবে টিকে যায়। পাকস্থলীর ঝিল্লী বা MUCOSAতে প্রদাহ সৃষ্টির মাধ্যমে পাকস্থলীর সল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদি প্রদাহ বা গ্যাষ্ট্রট্রাইটিস থেকে শুরু করে গ্যাষ্ট্রিক ও ডুইডেনাল আলসার সৃষ্টি করে। অল্প কিছু সংখ্যার রোগী মারাত্মক পাকস্থলীর ক্যানসার এবং MALT LYAMPITOMA নামে অন্য এক ধরনের ক্যানসার জাতিয় অসুখে পতিত হয়। পাকস্থলীর এসব রোগ সৃষ্টি করতে কয়েক যুগ পর্য্যন্ত পার হতে পারে।
Prof. Dr. Mahbub H Khan MBBS, PhD-Liver Med (Sydney) DSM (Vienna) Website: www.profmahbubhkhan.com Mobile 01911356298
হেলিকোব্যাকটার আক্রান্তের রোগ লক্ষন, পরীক্ষা ও চিকিৎসা